কিডনী দেহের ভীষণ জরুরী অঙ্গ। সংখ্যাতে দুইটি। পেরে পেছেনে, কোমড়ের দিকে, দুই পাশে (বাম ও ডান) রয়েছে দুইটি। লম্বায় প্রায় ৪ ইি এই অঙ্গটি দেখতে কমলা রেবুর কোয়ার (বড় কমলা লেবুর কোয়া) মতো। একজন পুরুষ মানুষের কিডনীর থেকে, একজন মহিলার কিডনীর ওজন তুলনামূলক ভাবে কম।
এই অঙ্গ দ্বয়ের প্রধান কজ হলো-রক্তকে পরিষ্কার করা। অর্থাৎ রক্তের রোগ জীবাণু ও দেহের ক্ষতিকর তরল পদার্থকে মূত্রের সাহায্যে দেহের বাইরে বের করে দেয়। মূত্র তৈরী করা কিডনীর আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
কিডনীকে বাংলাতে বৃক্ক বলে (বৃক্ক)। কিডনী দেহের তরল পদার্থের সাম্যাবস্থা বজায় রাখে, মূত্রের মাধ্যমে তরল জীবাণুগুলোকে শরীরের বাইরে বের করে দেয়। রক্তে ক্ষার ও লবণের সমতা বজায় রাখে।
রক্তকে ছেঁকে পরিষ্কার করে, তাই কিডনীকে দেহের ‘ছাকন যন্ত্র’ বলে। মানুষ ঘুমিয়ে থাকলেও কিডনী কাজ করতে থাকে। কিডনী প্রতিদিন একজন মানুষের গড়ে প্রায় এক থেকে দুই লিটার মূত্র তৈরী করে। প্রতিদিন তাই দেড় থেকে দুই লিটার পানি পান করা দরকার।
পানি ঠিক মতো পান করলে কিডনী সুষ্ঠুভাবে কাজ করতে পারবে। ফলে দেহের রোগ জীবাণু ঘাম ও মূত্রে সাহায্যে বের হবে।
কিডনীর যতেœ করণীয়ঃ
১। বছরে অন্তত একবার পুরো দেহের পরীক্ষা করান। এতে লুকানো অসুখগুলো ধরা পড়বে। অবশ্যই ওজন, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
২। যেকোন প্রকার মাদক দ্রব্য বর্জনীয়। মাদক দ্রব্য দেহের প্রতিটি অঙ্গের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়। কিডনী ‘রেনিন’ (জবহরহ) নামের এক ধরণের হরমোন তৈরী করে। এই হরমোন রক্তচাপ (ব্লাড প্রেশার) নিয়ন্ত্রণ করে। মাদক গ্রহণকারীদের ‘রেনিন’ ঠিকভাবে কাজ করেনা।
চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত যে কোন ওষুধ দীর্ঘ বছর খাবেন না। একবার জন্ডিস যাদের হয়েছে তারা কিডনীর প্রতি আরো মনোযোগী হউন।
কিডনীতে ইনফেকশানের সমস্যায় ভুগছেন, এমন ব্যক্তিরা চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত পানি ও কোন ওষুধ খাবেন না। কিডনী ঠিকভাবে কাজ করতে না পারলে, দেহের দূষিত তরলগুলো সঠিকভাবে দেহ থেকে বের হতে পারেনা। তখন দূষিত পদার্থগুলো দেহে জমতে থাকে। বছরের পর বছর দেহের দূষিত পদার্থগুলো কিডনীতে জমে পাথর তৈরী করে। তাই নিয়মিত ২ লিটার পানি পান করুন।
ডাঃ ফারহানা মোবিন
এমবিবিএস (ডি.ইউ), পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন (পাবলিক হেল্থ),
পিজিটি (গাইনী এন্ড অবস্),
রেসিডেন্ট মেডিকেল অফিসার (গাইনী এন্ড অবস্),
স্কয়ার হাসপাতাল, ঢাকা, বাংলাদেশ,
ডায়াবেটোলোজি, বারডেম হসপিটাল।